কামরুল হাসান হৃদয়, লক্ষ্মীপুর
টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের ৯টি ইউনিয়ন। মেঘনানদী বিধৌত এ অঞ্চলটিতে সামান্য জোয়ারের পানি এবং টানা বৃষ্টিতে চরম বেগ পোহাতে হয় নদী তীরবর্তী চর ফলকন, সাহেবের হাট, চর মার্টিন, পাটারির হাট, চর কালকিনি, চর লরেঞ্চ ও হাজীরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।
বছরের অন্যান্য সময়ে তোরাবগঞ্জ এবং চর কাদিরার মানুষ নদীতীরবর্তী এলাকা থেকে দূরে হওয়ায় এ ভোগান্তি থেকে কিছুটা নিস্তার পেতো। কিন্তু গত ২৩দিন ধরে চর কাদিরা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মানুষজন রয়েছেন চরম দুর্ভোগে।
পুরো ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট প্লাবিত হয়েছে পানিতে।
ঘরবাড়িতে পানিবন্দি মানুষেরা জীবন বাঁচাতে ঠাঁই নিয়েছেন নিকটস্থ আশ্রয়ণ কেন্দ্র সমূহে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চর কাদিরা ইউনিয়নের পূর্ব চর কাদিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (রব বাজার) ১৪টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
মেহের নেছা নামক এক ভোগী জানান, গত ২৩দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় আছি। ঘরের ভেতরে কোমর সমান পানি, চৌকি একটার উপরে আরেকটা দিয়ে গত দিনগুলো পার করেছি। আর পারছি না দেখেই আশ্রয়ন কেন্দ্রে এসেছি।
হোসেনেরা নামে আরেক ভোগী জানান, স্বামী নেই। নাতি-নাতনি নিয়ে ভীষণ দুর্ভোগে আছি। পানিতে থাকতে-থাকতে অসুস্থ হয়ে গেছি। আজ দুদিন ধরে আশ্রয়ন কেন্দ্রে আছি। কোনো ঔষধ বা ত্রাণ সহায়তা পাইনি। শুধু গতকাল কয়েকজন ছাত্র এনে এক প্যাকেট বিরিয়ানি দিয়েছে।
স্থানীয় সাইফুল ও নাজিম নামে দুই শিক্ষার্থী জানায়, দখলদারদের অবৈধ দখল, দূষণে নাব্যতা সংকটে পড়েছে ভুলুয়া নদী। কয়েকদিন আগে আমরা মানববন্ধনও করেছি।
বার-বার উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনে অবহিত করেও মেলেনি কোনো সুরাহা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিন উদ্দিন জানান, ৪নং ওয়ার্ডের ছয়’শ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। আমরা প্রশাসন এবং আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে যেভাবে পারছি সহায়তা দিচ্ছি।
কমলনগর উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু’বার আমরা রব বাজার এলাকাতে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি এবং আরো খোঁজখবর নিচ্ছি ও খাদ্য পৌঁছে দিবো।