৪০০ টাকার একটি মোরগ কেনাবেচায় ১০০ টাকা খাজনা নির্ধারণ করেছে লক্ষ্মীপুর পৌর কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে মোরগ ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা গতকাল রোববার সারা দিন দোকান বন্ধ রেখে প্রতিবাদ করেছেন। পরে এ নিয়ে গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত খাজনা আদায়কারী ও মোরগ ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমঝোতার জন্য বৈঠক হয়। খাজনা না কমালেও ইজারাদারের অনুরোধে আজ সোমবার দোকান খোলা হয়। তবে অযৌক্তিক খাজনা প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর সিদ্ধান্তের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কয়েকজন মোরগ ব্যবসায়ী বলেন, লক্ষ্মীপুর পৌরসভায় মোরগ বিক্রির শতাধিক দোকান আছে। এর মধ্যে মাংস বাজার আছে ১৮টি। গত শনিবার মাংস বাজারের মোরগ মার্কেটে পৌরসভার খাজনা আদায়কারী ব্যক্তি মনিরুজ্জামান পাটোয়ারীর লোকজন নতুন খাজনা আদায়ের তালিকা ঝুলিয়ে দেন। সেখানে মোরগ কেনাবেচাতে ২৫ শতাংশ খাজনা নির্ধারণ দেখে ক্ষুব্ধ হন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা পরদিন রোববার সব দোকান বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানান। এতে ভোগান্তিতে পড়েন মোরগ কিনতে আসা ব্যক্তিরা।
২৫ শতাংশ খাজনা নির্ধারণের বিষয়ে বলা হয়েছে, এর মধ্যে ১০ শতাংশ দেবেন দোকানে মোরগ সরবরাহকারী। আর বাকি ১৫ শতাংশ দেবেন দোকানের বিক্রেতা। তবে বাস্তবে পুরো খরচটা গিয়ে ক্রেতার ওপর বর্তাবে বলে সবার শঙ্কা।
মোরগ ব্যবসায়ীদের কোনো সংগঠন না থাকলেও মো. ওসমান গনি দায়িত্বশীল ব্যক্তির ভূমিকা পালন করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তিনি বলেন, পুরো ২৫ শতাংশ খাজনা খুচরা ক্রেতার ওপর বর্তাবে। একজন ক্রেতাকে ৪০০ টাকার একটি মোরগ কিনতে হবে ৫০০ টাকায়। এতে পৌর শহর থেকে আর কেউ মোরগ কিনতে আসবেন না। শহরের বাইরে বাজারগুলোতে চলে যাবেন। শহরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
সমান গনি বলেন, ‘অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে পারছি না। তাই ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইজারাদার ব্যক্তি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান পাটোয়ারী পরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কোনো সমঝোতা ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। তিনি (মনিরুজ্জামান) অনুরোধ করেছেন দোকান খোলা রাখার জন্য। এ জন্য আজ সোমবার দোকান খোলা রাখা হয়েছে। অযৌক্তিক খাজনা প্রত্যাহার না হলে পরে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি পৌরসভা থেকে খাজনা আদায়ের জন্য ইজারা নিয়েছি। ১০ ও ১৫ শতাংশ হারে খাজনা আদায়ের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী খাজনা আদায়ের জন্য ইজারাদারকে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। খাজনা সহনীয় পর্যায়ে করা হবে।