কামরুল হাসান হৃদয়: মজুরির টাকা চাওয়ায় মালিককে মারধর। লুটপাট করা হয় গ্যারেজ। ঘটনার প্রতিকার চেয়ে থানায় অভিযোগ করেও বিপাকে ভুক্তভোগী। প্রভাবশালীদের হুমকি-ধামকিতে দোকান আর ঘর ছাড়া সে। পরিবার নিয়ে ভুগছেন নিরাপত্তাহীনতায়। হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায়।
অভিযুক্ত সিএনজি চালক বাহার উদ্দিন জেলার কমলনগর উপজেলার চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের আলি হোসেনের ছেলে। ভুক্তভোগী আলি হোসেন একই উপজেলার চর লরেন্স গ্রামের হাজী আবদুল মোতালেবের ছেলে। তিনি চর লরেন্স বাজার সংলগ্ন তুলাতলি রাস্তার মাথায় হাবীবা অটো পার্টস ও গ্যারেজের মালিক।
জানা গেছে, সিএনজি চালক বাহার হাবীবা অটো পার্টসে সবসময় গাড়ির কাজ করার। ঘটনার দিনও শনিবার (৬ মে) গ্যারেজের মেকানিককে দেখিয়েছেন সিএনজি। কিন্তু পূর্বের মতো মুজুরির টাকা না দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে বাঁধা দিলে উভয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাহারের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে লোকজন নিয়ে ছুটে আসেন তারই ছোট ভাই আজাদ হোসেন। পরবর্তীতে তারা মালিককে মারধর করে গ্যারেজ থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা ও সিএনজি নিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটির প্রতিকার চেয়ে শনিবার (৬ই মে) তারিখে কমলনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন আলী হোসেন। এতে বাহার ও আজাদসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৮-১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
হাবীবা অটো পার্টসের মালিক আলী হোসেন বলেন, থানায় অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই বাহারদের লোকজন বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে পরিবারের লোকদের মারধর ও হত্যার কথাও বলেছে।
বুধবার ( ১১মে ) ইফতি নামের একজন গ্যারেজে এসে গালমন্দ, মারধরসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছি। কিন্তু আটকের কিছুক্ষণ পরই সে ছাড়া পেয়ে যায়।
ইফতি থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আতঙ্ক আরো বেড়ে গেছে। গতকাল রাতে ভয়ে ঘুমাতে পারিনি বাড়িতে। পরিবারের সদস্য আর গ্যারেজ নিয়ে এখন চিন্তিত সে। তিনি ন্যক্কারজনক এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন প্রশাসনের কাছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে (৬মে) হাবীবা অটো পার্টসে সিএনজির কাজ করানোর পর বাহার টাকা বাকি রাখতে চায় এবং বকেয়া অনেক টাকা থাকায় গ্যারেজ মালিক বাকি দিতে না চাওয়ায় এক সময় দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এবং বাহার বিভিন্নরকম হুমকি ধমকি দিতে থাকে।
অভিযুক্ত বাহার হোসেন অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, ইফতি নামে কাউকে আমি চিনি না। তাছাড়া ইফতির সঙ্গে গ্যারেজ মালিকের কি হয়েছে সেটিও আমার জানা নেই। আর সেদিন মারধর কিংবা লুটপাট কিছুই হয়নি। শুধুমাত্র গ্যারেজ মালিক তর্ক করায় তাকে ছোট ভাই আজাদ একটা থাপ্পড় দিয়েছে।
এদিকে মুঠোফোনে কল দিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে অভিযোগটি জানতে চাইলে ইফতি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জানতে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মির্জা সাইফুল ইসলাম, ঠিকানা: দারুল মুসাফির ( নিচ তলা ) আব্দুল গণি হেড মাস্টার রোড, সদর, লক্ষ্মীপুর।