নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কামরুল হাসান ওরফে জোবায়ের (১৮) নামের এক শিক্ষার্থীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার সন্ধ্যার দিকে শহরের চন্দ্রপুর এলাকায় ছুরিকাঘাতের পর ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত সাড়ে নয়টার দিকে কুমিল্লায় তার মৃত্যু হয়।
জোবায়ের জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের আলাদিনগর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে। শহরের চন্দ্রপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় তারা বসবাস করেন। জোবায়ের শহরের সোনাপুর এলাকার আইডিয়াল পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
জোবায়েরের মা জেসমিন আক্তার জানান, সোমবার মাগরিবের নামাজের পর আরাফাত হোসেন ওরফে লাদেন নামের এক সহপাঠী জোবায়েরকে ফোন করে বাসা থেকে ডেকে নেন। কিছুক্ষণ পর বাসা থেকে আনুমানিক ১০০ গজ দূরে সড়কের ওপর রক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁর ভাই বাসায় এসে জোবায়েরের কথা জিজ্ঞেস করেন। তখন তাঁরা ফোন দিয়ে জোবায়েরের মুঠোফোন বন্ধ পান।
জেসমিন আক্তার বলেন, পরবর্তী সময়ে আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে শোনেন তাঁর ছেলেকে কারা নাকি পেটে ছুরিকাঘাত করেছে, তাকে হাসপতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে রাত সাড়ে নয়টার দিকে ছেলের ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় ছেলে মারা গেছেন বলে খবর পান। জেসমিন আক্তার তার ছেলের হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একই এলাকার রাকিব ও পিয়াসের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে আজ সোমবার সকালে জোবায়েরের সিনিয়র-জুনিয়র বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়। তখন জোবায়ের পিয়াসের ছোট ভাইকে চড়–থাপ্পড় দেন। ওই ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় রাকিব, পিয়াসসহ কয়েকজন জোবায়েরের ওপর হামলা চালান। হামলাকারীরা জোবায়েরের পেটে ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ রাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রাকিবকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।
এদিকে আরাফাত হোসেনের মা পুষ্পা বেগম তাঁর ছেলের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, আরাফাত জীবনবাজি রেখে জোবায়েরকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন। এখন কিছু লোক ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ ঘটনায় তাঁর ছেলেকে ফাঁসানোর চক্রান্ত করছে।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত যত দূর জানা গেছে, এলাকায় অপর পক্ষের সঙ্গে আগের কোনো বিষয় নিয়ে জোবায়েরের বাড়াবাড়ি হয়েছে। যার জের ধরে তারা তাঁকে ছুরিকাঘাত করেছে। এ ঘটনায় প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে একজনকে আটক করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মির্জা সাইফুল ইসলাম, ঠিকানা: দারুল মুসাফির ( নিচ তলা ) আব্দুল গণি হেড মাস্টার রোড, সদর, লক্ষ্মীপুর।