ওসমান গণি :
মাত্র একদিন বয়সী নবজাতক হাসপাতালে ফেলে পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়েছেন ইমু নামের এক গৃহবধূ। এমন অভিযোগ করেছেন তার স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে।
শিশুটির বাবা সুমন জানান, সোমবার সকালে তার স্ত্রী ইমু প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি নবজাতককে রেখে পালিয়ে যান।
সদ্যজাত শিশুটি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসক ও পরিবারের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে নবজাতকের মুখে দিয়ে রাখা হয়েছে খাবার স্যালাইন।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ রায়পুর জনসেবা হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটে। গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. রোমান, শিশুর বাবা, নানি ও দাদি। নেক্কারজনক এ ঘটনার বিচার ও স্ত্রীর খোঁজে ঐদিন রাত ১০টায় রায়পুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শিশুটির বাবা মোহাম্মদ সুমন।
নিরুদ্দেশ হওয়া গৃহবধূর স্বামী বলেন, প্রায় দু’বছর আগে চরপাতা গ্রামের আবদুর রশিদ মাস্টারবাড়ির মৃত শামসুল হকের মেয়ে ইমুকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করি। দেড় বছর ধরে আমি ঢাকা শহরে বাস চালাই। বিয়ের পর থেকে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে প্রায়ই সে আমার সঙ্গে ঝগড়া করতো। এ সময় আমার স্ত্রী বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক করে। একাধিকবার পারিবারিক ও সামাজিকভাবে বৈঠক করেও তাকে সঠিক পথে আনতে পারিনি। ইমু থানায়ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে নানাভাবে হয়রানি করে। অবশেষে সন্তানের কথা চিন্তা করে ঢাকায় নিয়ে একসঙ্গে ভাড়া বাসায় বসবাস করি। কয়েক দিন আগে তাকে নিয়ে বাড়িতে আসি। ইমুর শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় চিকিৎসাও করাই। এখন বাচ্চা জন্ম দিয়ে ফেনী শহরের ছেলে মো. হাসান নামে তার এক প্রেমিকের সঙ্গে চলে গেছে।
সুমন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ইমুর ফুফুর ও দাদির কারণে তাদের সংসার নষ্ট হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানান ভুক্তভোগী শিশুর পিতার জনক।
এ বিষয়ে নিরুদ্দেশ হওয়া ইমু মোবাইল ফোনে বলেন, আমার স্বামী আমাকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শাশুড়ি আমাকে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করেছে। এ কারণে ওই বাচ্চা হাসপাতালে রেখে অজ্ঞাত স্থানে চলে আসছি। এদের ওপর প্রতিশোধ নিতেই এ কাজ করেছি। সুমনের সঙ্গে আমার এক বছর আগেই সম্পর্ক শেষ।
তবে গৃহবধূ ইমু দাবি করেন, তিনি কারও হাত ধরে যাননি। মা ও ছেলের বিচার করলে তিনি নবজাতকের কাছে ফিরবেন।
ইমুর মা জাহানারা বেগম জানান, তার মেয়ে খুবই খারাপ। তাকে শাসন করতে পারেননি তিনি। তার বাবা মারা যাওয়ার পর দাদি ও ফুফুর কাছে থাকতো ইমু।
এ বিষয়ে রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, নবজাতক শিশুটি তার দাদি, নানি, ফুফু ও বাবার সাথে হাসপাতালে রয়েছে। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এ বিষয়ে।